ভারতকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের নতুন ব্লক নিয়ে বিশ্লেষণ 

  • সোনালী ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
ভারতকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের নতুন ব্লক নিয়ে বিশ্লেষণ 

ফাইল ছবি

পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা বা ‘ব্লক’ গঠনের প্রস্তাব চলতি বছরের জুনে ত্রিপাক্ষিক আলোচনায় আলোচ্য হয়েছে। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছেন, এই প্রস্তাব আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের জীবনমান বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

পাকিস্তান সরাসরি বলছে, এই উদ্যোগ কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়। তবে বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, নতুন ব্লকে ভারতকে প্রভাব সীমিত বা সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হতে পারে।

ইসহাক দার আঞ্চলিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বলেছেন, সংঘর্ষের চেয়ে সহযোগিতা অপরিহার্য। বর্তমান সময়ে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে স্থবির, এবং ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কও শ্রীঘ্রই স্বাভাবিক নয়। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান চীনের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক উদ্যোগের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় অংশীদারিত্ব ও সংযোগের নতুন পথ খুঁজছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রস্তাবটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী হলেও কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা সীমিত। লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিকিউরিটি, স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি রিসার্চের পরিচালক রাবিয়া আখতার বলেন, প্রস্তাবের এই পর্যায় এখনও আকাঙ্ক্ষামূলক, বাস্তব কার্যকারিতা এখনো সন্দেহজনক।

সার্কে ভারতের প্রভাব ও পাকিস্তানের বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক সহযোগিতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর আঞ্চলিক বাণিজ্য মাত্র ৫ শতাংশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্যের তুলনায় এটি খুবই সীমিত। পাকিস্তান মনে করছে, নতুন ছোট বা নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক ব্লক আঞ্চলিক সহযোগিতায় বৈচিত্র্য আনতে পারে।

বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেন, সফল হতে হলে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে একসাথে কাজ করার মানসিকতা দেখাতে হবে এবং প্রচলিত ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসতে হবে। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এই ধরনের উদ্যোগে অর্থনৈতিক স্বার্থ দেখাতে পারে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক প্রভীন দন্থি মনে করেন, যদি প্রস্তাব বাস্তবে এগোয়, তবে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ব্যবধান বাড়তে পারে। একই সঙ্গে চীনের সঙ্গে ভারতের আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা তীব্র হবে।

তবে বড় দেশগুলোর রাজনীতি ও স্বার্থ, ছোট দেশগুলোর প্রভাব এবং রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে, প্রস্তাবিত নতুন ব্লকের পূর্ণ কার্যকারিতা অর্জন করা সহজ হবে না। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এটি এখনো কেবল সম্ভাবনার পর্যায়ে।

এসএইচ 

Link copied!